• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

নওগাঁর পূণর্ভবা নদী এখন বালুচর

  • ''
  • প্রকাশিত ১৬ এপ্রিল ২০২৪

নওগাঁ প্রতিনিধি:

নওগাঁর উত্তাল পূণর্ভবা নাব্যতা হারিয়ে এখন বালুচরে পরিণত হয়েছে। পূণর্ভবা পোরশা উপজেলার সীমান্তবর্তী নিতপুর ইউনিয়নের পশ্চিম পাশ দিয়ে প্রবাহিত। নদীতে এক সময় চলাচল করতো অসংখ্য নৌকা, লঞ্চ, স্টীমার।

ব্যবসায়ীদের ব্যবসার কাজে গানের সুরে মাঝিরা নৌকা নিয়ে ছুটে চলতো চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর, ভোলাহাট, নাচোল সহ বিভিন্ন উপজেলার ব্যবসা কেন্দ্রগুলোতে। ওই উপজেলা গুলির বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা বড়বড় হাটবাজারে ব্যবসার জন্য মাঝিমাল্লারা তাদের ছোট বড় নৌকায় পাল তুলে ব্যবসায়ীদের ধান, পাট, আলু, বেগুন, সরিষা, কালাই, গম সহ নানা ধরনের পণ্য নিয়ে ছুটে চলতেন। শুধু ঔসব পণ্যই নয়, হাটবাজার গুলোতে বিক্রির জন্য তারা নিয়ে যেতেন গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি। সে সময় নদীটি ছিল পূর্ণ যৌবনা।

নদীকে সহজ পথ ভেবে কম খরচে যাতায়াতের জন্য অসংখ্য মানুষ ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে জীবন জীবিকার শক্ত ভীত গড়ে তুলেছিলেন। আর অগণিত হাটবাজারই নয় এই নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল অনেক ব্যবসায়িক জনপদ। এছাড়াও নদীর পানি দিয়ে কৃষকরা দুই পাড়ের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে ধান সহ বিভিন্ন সবুজ ফসল ফলাতেন। এই পানিতে নানা ফসলে ভরে উঠতো ফসলের মাঠ। কিন্তু ফসল থাকলেও সেই পানি এখন আর নেই। শ্যালো মেশিনের পানিতে চাষাবাদ করতে হচ্ছে কৃষকদের।

অপরদিকে, জীবিকার সন্ধানে নদী সংলগ্ন ও পাশের গ্রাম গুলিতে অসংখ্য জেলে পরিবারের বসতি গড়ে উঠেছিল। ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছেরও অফুরন্ত উৎস ছিল এই পূণর্ভবা। মাছ পাওয়া যেত সারা বছর ধরে। জীবিকা নির্বাহের জন্য জেলেরা রাতদিন ডিঙি নৌকায় জাল নিয়ে চষে বেড়াত মাছ ধরার জন্য। সেই মাছ বিক্রি করে অসংখ্য জেলে পরিবারের সংসার চলতো।

পূনর্ভবার সাথে এখন জেলে পরিবার গুলো হয়ে গেছে প্রায় বিলীন। সে সময়ের ব্যবসা বণিজ্যের উৎসগুলো হয়ে গেছে চিরতরে বন্ধ। সময় গড়িয়ে চলার সাথে সাথে সেই ভরা যৌবনা পূণর্ভবা এখন বালুচরে পরিণত হয়েছে। দুই পাশের পাহাড় গুলো হয়েছে কৃষি জমি। আর নদী গর্ভে জেগে উঠা উঁচু চরে এলাকার শিশুরা খেলছে ক্রিকেট, বল সহ বিভিন্ন খেলা। থমকে গেছে নদী আর নিভে গেছে বিপুল সম্ভবনা জাগানো কর্মকাণ্ড। নদী কেন্দ্রিক সম্ভবনাগুলো নিভে গেলেও কেউ কখনও এসব নিয়ে ভাবেনি। খরা মৌসুমে সরকারিভাবে নদীটি খননের পদক্ষেপ নেয়া হলে অন্তত বালুচরে পরিণত হতো না। খনন না করার ফলে নদীটি ফসলের জমিতে পরিণত হয়েছে। আর এ সুযোগে অনেকেই ধান চাষ করছেন। এভাবে চলতে থাকলে এক সময়ের উত্তাল পূণর্ভবা মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে বলে অনেকে মনে করছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads